কলা খাওয়ার এইসব গোপনীয় উপকারিতা ও অপকারিতা আপনি জানেন কি?

উপকারী ফল হিসাবে কলা আমাদের সকলের অতি পরিচিত একটি ফল।কলা খাওয়ার বিভিন্ন গোপনীয় উপকারিতা হচ্ছে ফলমূলের মধ্যে কলাই হল একটি সহজলভ্য ও ক্যালরিতে ভরা একটি স্বাস্থ্যকর ফল এবং কলায় প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন, খনিজ পদার্থ, মিনারেল সহ সকল প্রকার পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এজন্য বলা হয় শরীরের জন্য কলার পুষ্টিগুণ অনেক।

কলা খাওয়ার গোপনীয় উপকারিতা


ভূমিকা

আমাদের অতি সুপরিচিত একটি তাজা ফল হচ্ছে কলা। তাছাড়া কলার মধ্যে পুষ্টিকর কিছু উপাদান থাকে যে আমাদের হৃদপিন্ডের কার্যকারিতা কে বাড়াতে এবং রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে কাজ করে। শুরুর দিকে কলা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে পাওয়া যেত। তবে শরীরের জন্য গলার পুষ্টিগুণ এর উপর নির্ভর করে এখন প্রায় সারা বিশ্বেই কলার অনেক চাহিদা রয়েছে।

আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রায় সবাই কলা গ্রহন করে থাকি বা খেয়ে থাকি কিন্তু কলা খাওয়ার বিভিন্ন গোপনীয় উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের সবার জেনে থাকা প্রয়োজন।

কলা খাওয়ার গোপনীয় উপকারিতা


শরীরের জন্য কলার পুষ্টিগুণ

আমরা যদি একশ গ্রাম কলার নিউট্রিশনাল গুণাগুণ দেখি তাহলে দেখতে পাই কলায় থাকে,
  • ক্যালরি ৮৯%
  • কার্বোহাইড্রেট ২২.৮ গ্রাম
  • টোটাল ফ্যাট ০.৩৩ গ্রাম
  • প্রোটিন ১.০৯ গ্রাম
  • সুগার ১২.২ গ্রাম
এছাড়াও কলায় ভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে যেমন,
ভিটামিন এ 
ভিটামিন সি
ভিটামিন বি৬
ভিটামিন ই
ভিটামিন কে
জিংক
কপার 
সোডিয়াম
সিলেনিয়াম
ক্যালসিয়াম
আয়রন
ম্যাগনেসিয়াম
পটাশিয়াম
ফসফরাস ইত্যাদি।

আরো পড়ুনঃ How to Recover a Hacked Facebook Account

কলা খাওয়ার বিভিন্ন গোপনীয় উপকারিতা

দামে কম হওয়া সত্বেও মানের দিক দিয়ে ভালো একটি পুষ্টিকর খাবার হলো কলা। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু শরীরের জন্য এর পুষ্টিগুণও অনেক।

হারানো এনার্জি ফিরিয়ে আনতে কলার গুনাগুনঃ কলায় প্রচুর পরিমাণে এনার্জি বিদ্যমান রয়েছে। শরীরের জন্য কলার পুষ্টিগুণগুলো যেসব থাকা দরকার সেই সব রকমের পুষ্টিগুণ কলাই বিদ্যমান থাকায় খেলোয়াড়দের অধিকাংশ সময়ই  কলা খেতে দেখা যায়। শরীরের দুর্বলতা দেখা দিলে এই ফল খেলে অনেকটা এনার্জি ফিরে পাওয়া যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ের জন্য কলাঃ কলার বিভিন্ন পুষ্টিগুণের সাথে কলাতে বিদ্যমান রয়েছে ফাইবার। কলা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অনেক উপকারী একটি ফল। তাই যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তারা নিয়মিত দুইটি করে কলা খেলে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবে।

ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে কলার গুনাগুনঃ কলাই সামান্য পরিমাণে লবণ এবং প্রচুর ক্যালসিয়াম বিদ্যমান থাকাই কলা উচ্চ রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দীর্ঘদিন ধরে ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত রোগীরা কলা খেলে ভালো উপকার পাবে।

গর্ভবতী নারীদের জন্য কলাঃ গর্ভাবস্থায় নারীদের পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার খেতে হয়। এ সময় নারীরা নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ায় বিভিন্ন ধরনের দুর্বলতায় ভুগতে থাকে। তাদের এই দুর্বলতা কাটাতে কলা অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কারণ কলায় বিদ্যমান রয়েছে শর্করা। শর্করা জাতীয় খাবার দুর্বলতা দূর করে।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে কলাঃ আমাদের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আমরা যারা প্রতিদিন একটি করে কলা খায় তাদের স্মৃতিশক্তি আগের চেয়ে অনেক বেশি স্ট্রং হয়। বাদাম যেমন আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে তেমনিভাবে কলাও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে কার্যকরী তাই আমাদের প্রতিনিয়ত কলা খাওয়া দরকার।

পাকস্থলির আলসার দূর করতে কলাঃ খাদ্য হজমের জন্য প্রচুর পরিমাণে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড নির্গত হয় পাকস্থলীতে। বিভিন্ন কারণে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডগুলো পাকস্থলীর ক্ষয় এবং আলসারের রূপ নেয়। নিয়মিত কলা খাওয়ার অভ্যাস থাকলে এইসব আলসার থেকে নিস্তার পাওয়া যায়। 

কলা একটি ক্ষার জাতীয় পদার্থ। তাই ক্ষারের সাথেসাথে এসিডের বিক্রিয়া করে পাকস্থলীর অতিরিক্ত অম্লতা জমা থাকে সেটা দূর করে। এভাবে আমাদের পাকস্থলীর আলসার নিরাময় হয়।কলা খাওয়ার  গোপনীয় উপকারিতা না জানার ফলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে থাকে।

রক্তস্বল্পতা দূরীকরণে কলাঃ আমাদের শরীরের রক্তে যখন হিমোগ্লোবিন কমে যায় তখন রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। বিদ্যমান থাকা আইরন রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায় রক্তস্বল্পতা দূর হয়। রক্তস্বল্পতা দূর হওয়ারদূর হওয়ার মাধ্যমে এনিমিয়া থেকে প্রতিকার পাওয়া যায়।

কলা খাওয়ার গোপনীয় উপকারিতা



কাঁচা কলার ভর্তা খাওয়ার উপকারিতাঃ

পাকা কলা খাওয়ার বিভিন্ন গোপনীয় উপকারিতা সহ বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা আগেই জানলাম। কিন্তু শুধু কি পাকা কলায় খেতে হবে। আমরা কলা কে কাঁচা এবং পাকা দুই ভাবেই খেতে পারি। পাকা কলার মত কাঁচা কলারও শরীরের জন্য অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। আমরা সাধারণত কাঁচা কলা কে  সবজি হিসেবেই খাই।

আমাদের জন্য অনেক সহজলভ্য একটি সবজির মধ্যে পড়ে কাঁচা কলা। কারণ এতে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ফসফেট ম্যাগনেসিয়াম সহ বিভিন্ন ধরনের প্রোবায়োটিক বিদ্যমান থাকে।কাঁচা কলা কে আমরা ভর্তা অথবা তরকারি হিসেবে গ্রহণ করতে পারি। কাঁচা কলার ভর্তার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা রয়েছে। সেগুলো হলোঃ

  • এতে ফাইবার বিদ্যমান থাকে। ফাইবার অনেক সময় আমাদের পেট ভরিয়ে রাখতে পারে। এতে আমাদের তাড়াতাড়ি ক্ষুধা লেগে যায় না। দ্রুত ক্ষুধা না লাগার কারণে আমাদের অন্য খাবার খাওয়ার প্রয়োজনও হয় না। যার কারণে আমাদের ওজন হ্রাস পায়।
  • আমাদের রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতেও কলার ভর্তা অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কলা আঁশ যুক্ত হওয়ায় শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আশঁ যুক্ত হওয়ায় খাবার দ্রুত হজম হয়।
  • ডায়রিয়া ও পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ফল হল কলা।
  • নিয়মিত কাঁচা কলা খাওয়া আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
  • কোলন টাইপ নানা ধরনের অসুখ দূর করতে কলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া করুন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতেও কলার ভূমিকা অপরিসীম।
কলা খাওয়ার গোপনীয় উপকারিতা

কলা কখন খেতে হবে

কলা খাওয়া নিয়ে আমাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের দ্বিমত সৃষ্টি হয়। যেমন কলা কখন খেতে হবে, দিনে নাকি রাতে, ভরা পেটে নাকি খালি পেটে? কলা খাওয়ার বিভিন্ন গোপনীয় উপকারিতার চেয়ে অপকারিতা বেশী?

মানুষে যে কোন কথাই বলুক না কেন কলা সকালবেলাতেই খাওয়া উচিত। কারণ সকালে কলা খেলে সারাদিন ধরে এর উপকারিতা ভোগ করা যায়।সকালে খালি পেটে কোন নাস্তার সাথে কলা মিশিয়ে খাওয়া উচিত। তবে দিনের যেকোনো সময় খাওয়া গেলেও সকালে খেলে উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়।

কলা খাওয়ার অপকারিতা

খালি পেটে কলা খেলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তাই খালি পেটে কলা না খেয়ে কোন খাবারের সাথে  মিশিয়ে খেলে উপকারিতাই পাওয়া যাবে।তাছাড়া কলা ঠান্ডা জাতীয় ফল হওয়ায় রাতে কলা খেলে সর্দি-কাশিতে ভোগা রোগীদের সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া রাতে কলা খেলে হজম শক্তিতেও বিঘ্নতা ঘটে।তাই রাতে কলা না খাওয়াই ভালো। 

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, আশা করি উপরের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা কলা খাওয়ার বিভিন্ন গোপনীয় উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। কলা খাওয়ার যথাযথ নিয়মাবলী এবং শরীরের জন্য কলার পুষ্টিগুণ সহ আরো নানান বিষয় অনেক সুন্দরভাবে বোঝানো হয়েছে।

উল্লেখিত আর্টিকেলটি আপনার উপকারে আসলে আপনার বন্ধু ও স্বজনদের সাথে শেয়ার করে তাদেরও পড়ার সুযোগ করে দিন। এছাড়াও এমন আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি সম্পর্কে জানতে নিয়মিত আমাদের এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন এবং একটি কমেন্ট করে জানিয়ে দিন।আপনাদের মূল্যবান কমেন্ট আমাদের উৎসাহ প্রদান করে।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার ওয়েবসাইটে এসে আর্টিকেল পড়ার জন্য।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

Previous Post Next Post
No One Comment On This Post
Comment

Comment On This Post

comment url
https://www.cpmrevenuegate.com/qy07gvqxte?key=99b257f6b797ecc549dc646d2fc7f361